১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের কারণ ও ফলাফল

১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কে আজকে আমরা এ আর্টিকেলে আলোচনা করব। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে পাকিস্তানের এই পর্যন্ত যতগুলো আন্দোলন হয়েছিল তার মধ্যে  গণঅভ্যুত্থান অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বড় আন্দোলন এই আন্দোলন ছিল। ১৯৬৯ সালের এই আন্দোলনে ব্যাপক সংমিশ্রণ ঘটেছিল যার ফলে এটি  পরিচয় লাভ করে গণঅভ্যুত্থান হিসেবে। বিশেষ করে 1968 সালের আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার পর থেকেই ১৯৬৯ সালের ঘটে যাওয়া এই ঘটনা বলি হিসাবে উল্লেখ করা যায়। ১৯৬৯ সালের ২৫শে জানুয়ারি দেশ ব্যাপী সংগঠিত হয়েছিল গণঅভ্যুত্থান ।

গণঅভ্যূত্থান সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য  

১৯৬৯ সালের পাকিস্তানের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল এই গণঅভ্যুত্থান। আওয়ামী লীগের ছয় দফা ভিত্তিতে শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি   জরুরী  আইন প্রত্যাহার এবং ছাত্রসমাজের ১১ দফা দাবিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলন শুরু হয়ে যায়। কিন্তু সেই সময়ে পাকিস্তান সরকার জনতার ছয় দফা দাবি এবং ছাত্র সমাজের এগারো দফা  দাবিকে রাষ্ট্রপতি দাবি হিসেবে ঘোষনা করেন,  যার ফলে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা সাজিয়ে শেখ মুজিবুর গ্রেপ্তার করেন। 

১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের কারণ সমূহ

 ১৯৬৯ সালে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ছিল গণঅভ্যুত্থান। এই গণহত্যা সৃষ্টির পিছনে উল্লেখযোগ্য কারণ রয়েছে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের কারণ তুলে ধরা হলো

১। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা: শেখ মুজিবুর রহমানের জনপ্রিয়তা অনেকাংশে বেড়ে যায় ছয় দফা দাবি এর প্রতি জনগণের সমর্থন করার জন্য । এর ফলে পাকিস্তানি শাসকেরা শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৩৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।  মামলা আদায়ের করার ফলে এতে করে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ অনেক বেশী বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। ফলে, আন্দোলনের পর আন্দোলন চালিয়ে যান। গড়ে ওঠে গণআন্দোলন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার প্রতিবাদ করার কারণে ১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল। 

২। ছয় দফা আন্দোলন: এই সময় ছয়টা পাগল ছিল বাঙালির মুক্তির সনদ । ১৯৬৬ সালে লাহোরে ৬ দফা দাবি পেশ করেন বঙ্গবন্ধ। এই কর্মসূচি পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ব্যাপকভাবে সমর্থন দিয়েছিলেন। জনগণের সমর্থনের ফলে  পাকিস্তান সরকার অনেক বেশি ভীত হয়ে যায়। বাঙ্গালীদের  মতিন মধ্যে অনেক বেশি সাহস করে তুলেছিল এই আন্দোলন। 

৩। সাহসী মনোবল তৈরি: পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি সমর্থন ও ছয় দফা দাবি এবং বঙ্গবন্ধুর ডাকে গড়ে তোলা হয়।

৪। ন্যাশনাল আওয়ামী দলের ভাঙ্গন তৈরি :গণঅভ্যুত্থান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল ন্যাশনাল আওয়ামী দলের ভাঙ্গন। সেই সময় ছয় দফা দাবি প্রতিষমর্থন জানিয়েছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের ওয়ারী দলের নেতা অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ এবং অন্যদিকে এর বিরোধিতা করেছিলেন মাওলানা ভাসানী প্রন্থীরা। এর ফলে ৬ দফা আন্দোলন আর বেশি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। 

৫। ছাত্র নেতার মৃত্যু: ১৯৭৯ সালে ২০ জানুয়ারি তারিখে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান। এর ফলে পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন আরো তীব্র থেকে তীব্রতার হয়ে উঠেছিল। 

১৯৬৯ সালের গণঅদ্ভুত্থানের ফলাফল সমূহ 

১৯৬৯ সালে করণীয় অদ্ভুত স্থানে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ অনেক বেশি জাগ্রত হয়ে উঠে। এখন আমরা আলোচনা করব সালের গণঅভ্যুত্থানের ফলাফলসমূহ গুলো সম্পর্কে নিম্নে দেয়া হলো 

১। শেখ মুজিবুর রহমানের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি: ১৯৬৯ সালে গণঅদ্ভুত্থানের পর বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান এর জনপ্রিয়তা বাড়তেই থাকে। এই সময় থেকেই শেখ মুজিবুর রহমান সর্বস্তরের জনগণের নেতা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। 

২। গোল টেবিল বৈঠকের আহ্বান: ১৯৭৯ সালের গণঅদ্ভুত্থানের পর রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনার জন্য গোল টেবিল বৈঠকে বসেন প্রেসিডেন্ট আয়ুব খান। সে সময় ওই বৈঠকে বাঙালির মুক্তির সনদ 6 দফা দাবি উত্থান করা হলে তা বাতিল হয় তখন আওয়ামী লীগ বৈঠক ত্যাগ করেন। 

৩। আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতির অবনতি:  কোন অদ্ভুত থানের পর সারা দেশে তখন থমথমে পরিবেশ বিরাজ করে আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি অনেক অবনতি হয়। পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ আয়না মেনে মিছিল আন্দোলন শুরু করে তার ফলে পুলিশ মিছিলে গুলিবর্ষণ শুরু করে।

৪।১৯৭০ সালের নির্বাচন: ১৯২৭ সালের সাধারণ নির্বাচন দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান সরকার। এই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ জাতীয় পরিষদের ১৬৯ আসনের মধ্য ১৬৭ টি আসন পায় এবং প্রাদেশিক পরিষদে 310 টি রাষ্ট্রপতি 298 টি আসন পায় তাই এই নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সংখ্যা গরিষ্ঠতা লাভ করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *